রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:২৮ অপরাহ্ন
পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার টেবুনিয়ায় শিক্ষকের শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে পাপিয়া খাতুন অনন্যা (১৩) নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী হাসপতালে ভর্তি হয়েছে।
আহত পাপিয়া সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের রানীগ্রাম পূর্বপাড়ার মো: শফিকুল ইসলামের মেয়ে।
গতকাল বুধবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে পাবনা সদর উপজেলার টেবুনিয়া ওয়াছিম পাঠশালায় এ ঘটনা ঘটে । আহত পাপিয়াকে পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষকের নাম জাবিহুল্লাহ। তিনি টেবুনিয়া ওয়াছিম পাঠশালার শরীরচর্চার শিক্ষক।
পাপিয়ার এক সহপাঠি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শ্রেণিকক্ষে ছাত্র ছাত্রীরা দুষ্টুমি করছিলো এ সময় হঠাৎ ঐ শিক্ষক হাতে থাকা লাঠি দিয়ে পাপিয়াসহ ৭ থেকে ৮ জনকে বেদম মারপিট করে।
মরপিটের সময় পাপিয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে বিদ্যালয়েই পানি ঢেলে পাপিয়াকে সুস্থ তরে তোলার চেষ্টা করা হয়। তাতে পাপিয়ার অবস্থার কোন উন্নতি না হলে অভিযুক্ত শিক্ষক জাবিহুল্লাহ পাপিয়াকে কোলে করে একটি সিএনজিতে তুলে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
মারপিটের শিকার অপর ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই শিক্ষক ক্লাসে তাদের গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে টেবুনিয়া ওয়াছিম পাঠশালার প্রধান শিক্ষক মো: ফজলুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি পাবনা হাসপাতালে যাচ্ছি পরে কথা বলবো।’
পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শাহেদ পারভেজ বলেন, ‘অভিযোগ প্রমানিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পাপিয়ার বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একজন শিক্ষক হয়ে ৯ম শ্রেণির ছাত্রীর গায়ে হাত তোলেন কি ভাবে?’
এদিকে একটি সূত্র বলছে, প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক পাপিয়ার মা মুর্শিদা বেগমকে সাথে করে হাসপাতাল থেকে পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যান, কিন্তু সেখানে গিয়ে ইউএনওকে না পেয়ে ফিরে আসেন তারা।
টেবুনিয়া ওয়াছিম পাঠশালার একাধিক শিক্ষক জানান, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন শিক্ষক জাবিহুল্লাহ ও প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক।
পাবনা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, ‘হাসপাতালে ভর্তির পরপরই পাপিয়ার জ্ঞান ফিরেছে, তার চিকিৎসা চলছে, বর্তমানে সে বেশ সুস্থ্য রয়েছে তবে তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।