রবিবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২১, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন
আটঘরিয়া প্রতিনিধি : পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার মাজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের দাবিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক এমপি পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস বলেছেন, আগামী ৭ই মে মাজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা মার্কা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল গফুর মিয়া ও তার নিকটাত্মীয়সহ কতিপয় ভাড়াটিয়া লোকজন প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র, নির্বাচনী অফিসে হামলা, ভাংচুর ও কর্মী সমর্থকদের মারপিট এমনকি নিজেদের অফিস ভাংচুর করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার হীন ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
শুধু তাই নয় ওই ইউনিয়নে যাতে সুষ্ঠভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হয়, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই গত বৃহষ্পতিবার রাতে আ. গফুর মিয়ার লোকজন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ধানের শীষ প্রার্থী মোঃ ফারুক আহমেদ, ইউপি মেম্বার প্রার্থী সাহেব আলীরসহ মোট ৪টি নির্বাচনী অফিসে হামলা, ভাংচুর ও ১০ জন কর্মীকে পিটিয়ে আহত করেছে। যার সংবাদ স্থানীয়সহ দেশের বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
সোমবার সকাল ১১ টায় পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
তিনি বলেন, আব্দুল গফুর ও তার লোকজনের এসব সন্ত্রাসী ঘটনার বিচার দাবিতে গত শুক্রবার পাবনা জেলা প্রশাসক ও পাবনা পুলিশ সুপার বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
সেই সাথে শুক্রবার সকালে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে আটঘরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন কিন্তু ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও মামলা রেকর্ড করে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশের রহস্যজনক নিরবতার কারণে নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজন গত শনিবার বিকেল ৩ টার দিকে প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নওদাপাড়ায় নৌকার নির্বাচনী অফিস নিজেরাই ভাংচুর করে থানায় মামলা দিতে ব্যর্থ হয়।
কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত একজন গ্রামবাসীর ওই ভাংচুরের সময় তার নিজের মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিও তখনই ফাঁস হয়ে যায়।
ভিডিওতে ২০/৩০ জন নৌকা মার্কার লোকজনের মুখগুলো পরিষ্কার দেখা যায়। শুধু তাই নয় গত শনিবার রাতে কঁচুয়া গ্রামে নৌকা প্রতীক নামিয়ে পানিতে ভাসিয়ে দিয়ে পুলিশ নিয়ে অন্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে।
এছাড়া অনলাইনসহ দুইটি স্থানীয় পত্রিকায় অসত্য তথ্যনির্ভর সংবাদ পরিবেশন করে সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর চেষ্টা করছে।
মাজপাড়া ইউনিয়নবাসী কোন সন্ত্রাস করে ভোট কেটে নিতে দেবেনা প্রয়োজনে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, মাজপাড়া ইউনিয়নে যাকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী করা হয়েছে তিনি একজন জনবিচ্ছিন্ন মানুষ। এছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভাই আব্দুল জব্বার ইউনিয়ন শান্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার বাড়িতে পাকিস্তানি পতাকা উড়েছে। তাকে প্রার্থী করায় বর্তমান আওয়ামীলীগের ৩ জন বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন করছে এবং দলের ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ নেতৃবর্গ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছে।
এই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠ-অবাধ ও নিরপেক্ষ ভাবে অনুষ্ঠিত হয় এবং জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সেজন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে জোর দাবি করেন তিনি।
প্রশাসনের ভূমিকার ব্যাপারে পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস বলেন, আমরা পাবনা পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করেছি তিনি আগামী ২৩ অথবা ২৪ তারিখে মাজপাড়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সবার সাথে মতবিনিময় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এ সময় মাজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী শুভ বিশ্বাস, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জিনাত আলী শেখ, ইউনিয়ন যুবলীগ সহ-সভাপতি মিলন মন্ডল, সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমানসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
© All rights reserved 2020 ® newspabna.com