মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০২:১৩ পূর্বাহ্ন
ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন থেকে হরহামেশাই চুরি হয়ে যাচ্ছে লৌহজাত সামগ্রীসহ রেলের বিভিন্ন সম্পদ। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকায় স্বয়ং স্টেশন মাস্টারও ভয় পান এসব ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে। ইতোমধ্যে প্লাটফর্মের নিরাপত্তা বেষ্টনীর লোহার পাইপ, ওপরে ওঠার সিঁড়ি ও সিগন্যালের মই চুরি হয়ে গেছে।
স্টেশন প্ল্যাটফর্মের পশ্চিম দিকে রয়েছে লোহার তৈরি বেড়া বা নিরাপত্তা বেষ্টনী। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য লাগানো এই বেষ্টনীর বিভিন্ন অংশ থেকে লোহার পাইপগুলো কেটে ও ভেঙে নিয়ে গেছে চোরেরা। দেখা গেছে, লোহার বেষ্টনীর চুরি যাওয়া পাইপের সংখ্যা প্রায় ৫৩টি। প্ল্যাটফর্মে ওঠার ২০টি সিআর প্লেটের (পাদানি বা সিঁড়ি) অস্তিত্ব নেই।
কয়েকজন রেল কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চোরেরা বিভিন্ন সময় এসব তামার তৈরি সিআর প্লেট ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে নিয়ে গেছে। স্টেশনের আপলাইন থেকে ডাউন লাইন পর্যন্ত সিগন্যালের সিঁড়িগুলোও রাতের বেলা কেটে নিয়ে গেছে চোরেরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিগন্যাল বিভাগের একজন কর্মচারী জানান, স্টেশন এলাকায় ১১টি সিগন্যাল রয়েছে। এসবের মধ্যে অধিকাংশ সিগন্যালের সিঁড়ি এরই মধ্যে চুরি হয়ে গেছে।
স্টেশনের পূর্ব পাশের এক দোকানদার বলেন, বাইপাস স্টেশন এখন ভুতুড়ে এলাকায় পরিণত হয়েছে। দেখলে মনে হয় ভাঙাচোরা পরিত্যক্ত কোনো এলাকা।
স্টেশন এলাকার বাসিন্দারা জানান, ট্রেনের টিকেট কালোবাজারে বিক্রি করা নিয়ে ২০১৪ সালের ১ আগস্ট দুই পক্ষের মধ্যে মারামারিতে দুজন নিহত হওয়ার পর বেশ কয়েক মাস বাইপাস স্টেশনে পুলিশের টহল ছিল। কিন্তু বছর খানেক আগে পুলিশি টহল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আবারও টিকেট কালোবাজারিরা তৎপর হয়ে উঠেছে। এদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সংঘবদ্ধ চোরদল।
স্টেশন মাস্টার গোলাম ফেরদৌস বলেন, সম্প্রতি প্ল্যাটফর্মের লোহার বেষ্টনী কেটে ৫০টি পাইপ এবং সিঁড়ির ১৬টি পিতলের সিআর প্লেট কেটে ও ভেঙে নিয়ে গেছে। ঈশ্বরদী রেল থানাকে একাধিকবার চিঠি দিয়ে পরিস্থিতি জানানো হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, রাতে তিনি এবং এক পয়েন্টসম্যান স্টেশনে থাকেন। নিরাপত্তার অভাবে নিজেরাই কক্ষের বাইরে যেতে পারেন না। এ অবস্থায় স্টেশনে রাতে সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার। না হলে রেলের সামগ্রী চুরি রোধ করা সম্ভব নয়।
রেল সূত্রে জানা গেছে, গড়ে প্রতিদিন এই স্টেশন দিয়ে ৬৬টি ট্রেন যাতায়াত করে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই রেলস্টেশন এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য কোনো রেল পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনীর আলাদা শাখা নেই। সন্ধ্যার পর থেকে দু’জন রেল কর্মচারী স্টেশনে দায়িত্ব পালন করেন।
ঈশ্বরদী রেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, বাইপাস স্টেশন থেকে রেলসামগ্রী চুরি হওয়ার বিষয়ে তার জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি।
© All rights reserved 2021 ® newspabna.com