বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১, ০৩:১৪ অপরাহ্ন
ঈশ্বরদী কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে বখাটেদের উৎপাত
ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : ঈশ্বরদী কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে বখাটেদের উৎপাতে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ছাত্রাবাসের ক্যান্টিন দখলে নিতে না পেরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বখাটেরা। গত দুই সপ্তাহ ধরে ক্যান্টিন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে ওই ছাত্রাবাসের ২ শতাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী।
কৃষিতে সমৃদ্ধ ঈশ্বরদীতে ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট। পাবনাসহ বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা এখানে চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্সে অধ্যয়ন করেন। সম্প্রতি স্থানীয় ও বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসীর দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এখানকার শিক্ষার্থীরা।
ঈশ্বরদী কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ জানান, স্থানীয় বখাটে তানভীর, মান্নাসহ বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে আবাসিক ছাত্রদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ছিনতাই করে আসছিল।
সম্প্রতি তারা ছাত্রাবাসের ক্যান্টিন পরিচালনার দাবি করে। ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ তাদের এই অনৈতিক দাবিতে রাজি না হলে বখাটেরা শিক্ষার্থীদের মারধর করে ক্যান্টিনের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এতে ছাত্রাবাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা চরম সমস্যায় পড়েছেন। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকেই রান্না করে খাচ্ছেন, অনেকেই ছাত্রাবাস ছেড়ে বাড়ি চলে গেছেন।
কয়েকটি সেমিস্টারের পরীক্ষা থাকায় নিরুপায় হয়ে খেয়ে না খেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন অনেকেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রাবাসের কয়েকজন আবাসিক ছাত্র জানান, তারা দূর দূরান্ত থেকে এখানে পড়তে এসেছেন। ছাত্রাবাসের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা বেশ ভালো ছিল। কিন্তু বহিরাগতদের অত্যাচারে তাদের এখানে টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে পড়েছে।
শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে গেলেই বখাটেরা টাকা পয়সা কেড়ে নেয়, মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করলেই মারধর করে। তারা বিষয়টি প্রশাসনকে জানালেও কোনো লাভ হয়নি।
বিষয়টি ঈশ্বরদী থানা পুলিশকে লিখিতভাবে জানানোর পরেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।
এ প্রসঙ্গে কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ছাত্রাবাসের হোস্টেল সুপার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় এসব সন্ত্রাসীরা এতটাই বেপরোয়া যে আমরাই ভয়ে থাকি কখন কি হয়। তারা জোর করে ক্যান্টিন বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা তালা খোলার সাহসও পাচ্ছি না। পুলিশকে ঘটনা জানিয়েও কার্যকর কোনো ফলাফল আসেনি।’
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ এস এস হাসান আলী বলেন, ‘আমরা ছাত্রদের কাছ থেকে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানানোর পর তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি।
আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কাছে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করেছি। এছাড়া বহিরাগতরা ক্যান্টিন পরিচালনার যে দাবি করছে তাও বিধিসম্মত নয়।’
তবে বখাটেদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পাবনার পুলিশ সুপার আলমগীর কবির। তিনি বলেন, ‘একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। বহিরাগতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ক্যান্টিনের তালা ভেঙে তা চালু করতে ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
© All rights reserved 2020 ® newspabna.com