মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২১, ০১:২৫ পূর্বাহ্ন
কলকাতা এখন গোলাপি রঙের শহর। নেতাজি সুভাস চন্দ্র বোস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পুরনো কলকাতার অলিগলিতেও লেগেছে গোলাপি রঙের ছোঁয়া। সড়ক বিভাজনগুলোর বাতি থেকে বিচ্ছুরিত হচ্ছে গোলাপি আলো।
এই গোলাপি রঙের উৎস একটি ক্রিকেট ম্যাচ, গোলাপি বলের দিবারাত্রির টেস্ট। বাংলাদেশ-ভারতের এই টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় ইডেন গার্ডেনসে। এই ম্যাচকে কেন্দ্র করেই কলকাতা সেজেছে অপরূপ গোলাপি রূপে।
সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান হয়েছেন ‘কলকাতার দাদা’ হিসেবে পরিচিত সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি। দায়িত্ব পেয়েই ভারত ও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলতে রাজি করিয়েছেন। ২০১৫ সালে প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট শুরু হলেও ক্রিকেটারদের আগ্রহ না থাকায় এতদিন ভারত এমন টেস্ট খেলেনি। তাই ইতিহাসের অংশ হতে সেজেছে কলকাতার ইডেন গার্ডেনসও।
ড্রেসিং রুমের সামনে ক্রিকেটারদের বসার জায়গা এটি। সেখানেও গোলাপি রং।
আউট, নাকি নটআউট! জানতে চাইলে মাঝেমধ্যেই চোখ রাখতে হবে এই বোর্ডের দিকে। সেটিকেও গোলাপি সাজে সাজানো হয়েছে।
সবই যখন গোলাপি হচ্ছে তখন আর কর্মীদের বাদ রাখার কী দরকার! তাইতো স্টেডিয়ামের কর্মীরা গোলাপি রংয়ের পোশাক পরে দায়িত্ব পালন করবেন।
স্টেডিয়ামের প্রতিটি পিলার গোলাপি রঙের কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্যালারির লাইটগুলো মোড়ানো হয়েছে গোলাপি রাঙতায়। আলো জ্বলে উঠলেই তাতে গোলাপি দেখায়।
গোলাপি রংয়ের ভবনের কারণে ভারতের জয়পুরকে ‘পিংক সিটি’ নামে ডাকা হয়। তবে বাংলাদেশ-ভারত টেস্টকে ঘিরে কিছুদিনের জন্য কলকাতাও গোলাপি হয়ে উঠেছে। নন্দন, রবীন্দ্র সদন ভাসছে আলোর ঝলকানিতে।
বর্তমানে কলকাতার সবচেয়ে উঁচু ভবন হচ্ছে ‘দ্য ফরটিটু’। সেখানেও কেমন গোলাপি রংয়ের ছোঁয়া লেগেছে দেখুন! কয়েক কিলোমিটার দূরের ধর্মতলা থেকেও এই সৌন্দর্য দেখতে পাচ্ছেন কলকাতাবাসী।
গঙ্গার বুকে যে লঞ্চ চলছে তাতেও রঙ দেওয়া হয়েছে গোলাপি। বিভিন্ন বাহনে গোলাপি স্টিকার ব্যাবহার করে নতুনত্ব আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই প্রথমবারের মতো গোলাপি বলে খেলবেন। এই বলে অনুশীলন করার পর ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি জানিয়েছেন, গোলাপি বল লাল বলের চেয়ে শক্ত ও ভারী। দিবা-রাত্রির ম্যাচ দিয়ে টেস্টের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টার প্রশংসা করলেও কোহলি মনে করেন, নিয়মিতভাবে এই টেস্ট আয়োজন করা উচিত হবে না। কারণ, এর ফলে সকালের সেশনে ক্রিকেটারদের মধ্যে যে ‘নার্ভাসনেস’ কাজ করে তা দেখার আনন্দ হারিয়ে যাবে।
২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচটি খেলেছিল। এরপর আরো ১১টি ম্যাচ হয়েছে। ফলে শুক্রবার বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে হতে যাওয়া ম্যাচটি হবে দিন-রাতের ১২তম টেস্ট। ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইতিমধ্যে অন্তত একটি করে দিন-রাত্রির টেস্ট খেলেছে।
দিবারাত্রির টেস্ট ক্রিকেটের শুরুটা চার বছর আগে হলেও বাংলাদেশ বা ভারত কখনোই ফ্লাড লাইটে টেস্ট ম্যাচ খেলেনি। তাই কলকাতাতেই দিবারাত্রির টেস্টে অভিষেক হচ্ছে প্রতিবেশী দুই দেশের। ঐতিহাসিক এই ম্যাচ ঘিরে তাই শহর জুড়ে চলছে উন্মাদনা।
© All rights reserved 2020 ® newspabna.com