শনিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২১, ১১:২১ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি : ‘ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ্দ হাঁটিয়া চলিলো’ এমন একটি কথার প্রচলন থকালেও সত্যি সত্যি ঘোড়ায় চড়ে ৯০ বছর পার করে দিয়েছেন চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আবু তালেব সরকার।
তাঁর মতে, জন্মের পরই ছেলের জন্য ঘোড়া কিনে এনেছিলেন বাবা। দুই বছর বয়সে বসতে শেখার পর থেকে বাবার কোলে উঠে ঘোড়ায় চড়া শুরু। ৮-১০ বছর বয়সে নিজেই সওয়ার হওয়া শুরু করেন ছোট ঘোড়ায়। এখন ৯২ বছর বয়সেও ঘোড়ায় চড়েই চলেন তিনি।
এই ব্যক্তির নাম মো. আবু তালেব সরকার। বর্তমানে তার বয়স ৯২ বছর। পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি।
শৌখিন এ ব্যক্তির চোখে-মুখে বয়সের ছাপ। ঠিকমতো শুনতে পান না। তাতে কি? এ বয়সেও ঘোড়ায় চড়ে চষে বেড়ান উপজেলার এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত। বয়স তাকে এখনো দমাতে পারেনি। পাকা সড়ক দিয়ে টগবগ করে ঘোড়ায় চড়ে আবু তালেব যখন যান, তখন সড়কে চলা মানুষ তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকেন।
অনেক সময় শিশু-কিশোররা তার পিছু নেয় এক নজর তাকে ও ঘোড়া দেখার জন্য। অনেক শিশু তাকে দাঁড় করিয়ে ঘোড়ায় ওঠার বায়না ধরে। অনেকের আবদার মিটিয়ে আবার ফিরে যান গন্তব্যে। চলার পথেই কথা হয় আবু তালেব সরকারের সঙ্গে। তিনি তার ঘোড়ায় চড়ার গল্প শোনান।
তিনি বলেন, পরিবারের বড়দের কাছ থেকে জেনেছেন, দুই বছর বয়সে তিনি যখন বসতে শেখেন তখন থেকেই বাবা তাকে কোলে নিয়ে ঘোড়ায় চড়তেন। বাবার সঙ্গে ঘোড়ায় চড়ে এখানে-সেখানে যেতেন।
তিনি আরও বলেন, ছোটবেলা থেকেই ধীরে ধীরে তাদের ঘোড়াটি নিজেই দেখাশোনা করা শুরু করেন। গোসল করানো থেকে শুরু করে ঘাস খাওয়ানো সবই করতেন তিনি।
এরপর নিজেই সওয়ারি হয়ে ওঠেন। মৃত্যুর আগে বাবা তার জন্য তিনটি ঘোড়া রেখে যান। সেটা দিয়েই শুরু। শেষ জীবনেও চলছে ঘোড়ায় সওয়ারি করেই।
এ বিষয়ে গুনাইগাছা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবেদ আলী বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকেই ওনাকে (আবু তালেব) ঘোড়ায় চলতে দেখছি। উনি যখন সামনে দিয়ে যান, তখন আগেকার দিনের জমিদার, রাজা-বাদশাহদের কথা মনে পড়ে। বিষয়টা বেশ ভালো লাগে। আমরা এটি উপভোগ করি।
© All rights reserved 2020 ® newspabna.com