বুধবার, ০৩ মার্চ ২০২১, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন
ফয়সাল মাহমুদ পল্লব : পাবনা পৌরসভায় ভোট গ্রহনের ১০ দিনের মাথায় মেয়র পদের ভোট আবার গণনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সাথে ভোটের ফল প্রকাশের গেজেটের ওপর এক মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ফলে পাবনা পৌরসভায় মেয়র পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) শরীফ উদ্দিন প্রধানের শপথ গ্রহন ও মেয়র পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পথ আটকে গেছে। দেখা দিয়েছে অনিশ্চিয়তা।
গত ৩০ জানুয়ারি এ পৌরসভায় নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে মেয়র পদে শরীফ উদ্দিন প্রধানকে ১২২ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রে ১ হাজার ২৬৫ ভোট বাতিল করা হয়। তাই পুনরায় ভোট গণনা চেয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্টে রিট করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি।
নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনির করা রিটের শুনানির পর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো.কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল বেঞ্চ বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রুলসহ এই আদেশ দেয়।
এর আগে পাবনা পৌর নির্বাচনের মনোনয়ন ঘিরে প্রকাশ্য প্রতিবাদে নামেন পাবনার আওয়ামী লীগ নেতারা।
নির্বাচনে মনোনয়নে দলের ত্যাগী নেতারা অবমূল্যায়িত হয়েছেন এমন দাবি করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে দলীয় সভানেত্রীর হস্তক্ষেপ কামনাও করেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের একাংশ।
মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ উদ্দিন প্রধানকে সমর্থন দেন তারা।
এদিকে প্রকাশ্যে নৌকার বিরোধিতা করায় পাবনার ১৮ শীর্ষ নেতাকে শোকজ করা হয়।
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ২৮ জানুয়ারি এ তথ্য জানানো হয়।
কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, নোটিশপ্রাপ্তরা পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী (নাগরিক মঞ্চ) জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শরিফ উদ্দিন প্রধানের পক্ষে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করছেন। ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে তাদের।
একই কারণে পাবনা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন ও সম্পাদক আরমান হোসেনকে বহিষ্কার ও কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
এদিকে ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত টানটান উত্তেজনার এ নির্বাচনে যথেষ্ট সতর্ক থেকে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করে পাবনা জেলা প্রশাসন।
নির্বাচন ও ভোট গণনা শেষে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) শরীফ উদ্দিন প্রধানকে বেসরকারিভাবে মেয়র ঘোষণা করা হয়।
জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মাহবুবুর রহমান ৩০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন।
ঘোষণার পরে শরীফ উদ্দিন প্রধান পাবনা পৌর মেয়র হচ্ছেন এমন নিশ্চয়তা থাকলেও হাইকোর্টের নির্দেশনায় ভোটের ফলাফল পুন:গণনা শেষে কি হবে এ নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চিয়তা।
ভোটের ফলাফল পুন:গণনার জন্য প্রায় ১ মাস অপেক্ষা করতে হবে পাবনা পৌরবাসীকে।
উল্লেখ্য, পাবনা পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের ৩৯টি ভোট কেন্দ্রের ৩৪৬টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ পুরুষ কাউন্সিলর পদে ৭৪ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
© All rights reserved 2021 ® newspabna.com