সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১, ০৯:২২ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার, চাটমোহর, পাবনা : দিনমজুর বাবার মেধাবী সন্তান আবদুল মান্নান মিজান। বাবা ছানাউল্লাহ প্রামাণিকের স্বপ্ন ছিল ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে। হঠাৎ চিকিৎসকের একটি কথায় স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে এ পরিবারটির।
ক্যানসার নামক দুরারোগ্য রোগ বাসা বেঁধেছে মিজানের গলায়। ছেলের এমন রোগের কথা শুনে চোখের নিচে কালো বলিরেখা পড়ে গেছে মা নাসিমা খাতুনের।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আগশৈয়াইল গ্রামে তাদের বাড়ি। মিজান উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র।
২০১৯ সালে তার এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা রয়েছে। রোগের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে মিজানের পড়াশোনা। তবে ক্যানসারকে জয় করে আবারও পড়াশোনায় ফিরে বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চায় মিজান।
ছানাউল্লাহ প্রামাণিক জানান, প্রায় বছর খানেক আগে হঠাৎ মিজানের গলার নিচে ফুলে যায়। স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে দেখিয়ে রোগ না সারায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক জানান মিজান ক্যানসারে আক্রান্ত।
পরে তাকে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. জাহাঙ্গীর কবির রাশেদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয় মিজানের।
চিকিৎসক ৬টি কেমোথেরাপি দেয়ার কথা বলেন। কেমোথেরাপি দিলে সারতে পারে মিজানের রোগ। চিকিৎসকের এমন কথা শুনে আশার আলো দেখতে শুরু করেন মিজানের বাবা-মা।
ধারদেনা করে মিজানকে দুটি কেমোথেরাপি দেন তার দিনমজুর বাবা। আরও চারটি কেমোথেরাপি ও যাতায়াত বাবদ প্রায় ১ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু চিকিৎসা করানোর মতো এত অর্থ নেই দিনমজুর বাবার কাছে। দিশেহারা বাবা-মা হন্যে হয়ে ঘুরছেন টাকার জন্য। কোথাও মিলছে না সহযোগিতা।
মা নাসিমা খাতুন অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, ‘ছেলেকে (মিজান) নিয়ে অনেক আশা ছিল। এখন তাকে নিয়েই দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। আল্লাহ কেন আমাদের মতো গরিব মানুষের ঘরে এমন রোগ দেয়! অভাব থাকলেও আমাদের ঘরে সুখ ছিল। কিন্তু ছেলের রোগে আমাদের সংসারে সুখ হারিয়ে গেছে।’
মিজানকে সুস্থ করতে বাবা ছানাউল্লাহ ও মা নাসিমা খাতুন প্রধানমন্ত্রী ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
© All rights reserved 2021 ® newspabna.com