বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন
ভাংগুড়ায় খাদ্যগুদাম থেকে পাচারকালে ৩’শ বস্তা গম উদ্ধার
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি: ভাঙ্গুড়ায় সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে পাচারকালে ৩০০ বস্তা গম উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে পুলিশ গুদাম কর্মকর্তা পরিতোষ কুমারকে আটক করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উদ্ধার করা এসব সরকারি খাদ্য জব্দ করে পুলিশের হেফাজতে দিয়েছেন।
বুধবার (২৭ জুলাই) দুদক ও জেলা খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
খাদ্য বিভাগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাতে ভাঙ্গুড়া এলএসডি (লোকাল সাপ্লাই ডিপো) থেকে ১৫ টন (৩০০ বস্তা) গম দুইটি মিনি ট্রাকে করে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলায় বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
গোপালনগর নামক স্থানে স্থানীয় এলাকাবাসী টের পেয়ে ওই ট্রাক দুইটি আটক করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসব গম আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে পুলিশ গুদামের ক্রয় সংক্রান্ত কাগজপত্র জব্দ করেছে এবং ছয়টি গুদাম সিলগালা করে দিয়েছে।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ছয়টি গুদাম সিলগালা করা হয়েছে। সিলগালা করা গুদাম একটি একটি করে খুলে পরীক্ষা করা হবে।
খবর পেয়ে বুধবার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিন ঘটনাস্থলে যান এবং ওসি ও ইউএনওর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন।
বুধবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে বৈঠক করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এই এলএসডির সব অনিয়ম খতিয়ে দেখা হবে।
সূত্র জানায়, স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গুদাম কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার দীর্ঘদিন ধরে সরকারি গুদাম থেকে খাদ্য পাচার করে আসছে। একজন ব্যবসায়ী জানান, ওই কর্মকর্তা প্রায়ই উৎকৃষ্ট মানের খাদ্য পাচার করে বিনিময়ে পঁচা বা নিম্নমানের খাদ্য গুদামে পুনঃস্থাপন করেন।
এর আগে সোমবার রাতের আঁধারে এক ব্যবসায়ীর নিম্নমানের চাউল নিয়ে গুদাম থেকে উৎকৃষ্ট মানের সমপরিমান চাউল তাকে সরবরাহ করা হয়। এই আভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও মো. শামছুল আলম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিনের নেতৃত্বে বুধবার একটি গুদামে অনুসন্ধান চালিয়ে ৩৫০ বস্তা পচা চাউলের সন্ধান পান বলে জানা গেছে।
ধান ক্রয়ের ক্ষেত্রেও ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
কৃষকরা জানান, সিন্ডিকেটের সদস্য ব্যতীত গুদামে কেউ ধান দিতে পারেনি। এভাবে চলতি ক্রয় মৌসুমে ভাঙ্গুড়া খাদ্য গুদামকে ঘিরে কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
© All rights reserved 2020 ® newspabna.com