শনিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২১, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন
বর্তমানে এই খামার থেকে বিভিন্ন মাংস প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত গরু ও ভেড়া সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন উৎপাদন হয় প্রায় ৩৫০ লিটার দুধ। আর এ বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে মিনার অধীনে কর্মসংস্থান হয়েছে ১৪ জনের।
এ সফলতার পেছনের গল্প বর্ণনা করে নারী উদ্যোক্তা মাহফুজা মিনা বলেন, ‘আমি মেয়ে, স্ত্রী, মা ও শিক্ষিকা এই পরিচয়গুলিতে যথেষ্ট সুখি। কিন্তু দেশের স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে নিজ ব্যক্তি পরিচয় না থাকায় আমি খুবই হতাশায় ভুগছিলাম। বাবা ডেইরি ব্যবসা শুরুর পর পরই মারা গেলে আমি তার ব্যবসার হাল ধরি। অনেকেই নানা ধরনের কথা বলে আমার মন খারাপ করে দিত। তাতে আমি পিছু হটিনি। আজ যখন বিভিন্ন সভা সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা আমাকে নারী উদ্যোক্তাদের মডেল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন তখন আমার সব পরিশ্রম সার্থক মনে হয়।’
প্রথমদিকে বিরক্ত হলেও মিনার সাফল্য ঘুচিয়ে দিয়েছে মায়ের ছেলে সন্তান না থাকার আক্ষেপ। তাকে নিয়ে গর্ব করেন গ্রামবাসীও।
এ ব্যাপারে মিনার মা নাজমুন নাহার বলেন, ‘ছেলে সন্তান না থাকায় এক সময় চরম হতাশ ছিলাম, কিন্তু মেয়ের সাফল্যে তার বাবার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এটা হয়তো ছেলে থাকলেও সম্ভব হতো কি না সন্দেহ। এখন আর সেই আক্ষেপ নেই। একদিন আমার মেয়েকে সারাদেশবাসী চিনবে বলে আমার বিশ্বাস।’
এ বিষয়ে মিনার সহকর্মী বিবি পাইলট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদত হোসেন বলেন, ‘প্রথম দিকে মিনার কাজকর্ম পাগলামী মনে হলেও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে আসলেই সফল হওয়া যায় মিনা তার সফল দৃষ্টান্ত। একজন নারী হয়েও মিনা এখন উত্তরবঙ্গের অন্যতম শীর্ষ ডেইরি ব্যবসায়ী। তার দেখাদেখি এলাকার অনেক নারীই এ ধরনের কর্মকাণ্ডে উৎসাহী হয়ে উঠছে।’
বর্তমানে সব খরচ বাদে মিনা খামার থেকে বছরে ১০ লক্ষাধিক টাকা আয় করেন। প্রায় ৮ বিঘা জমি নিয়ে মাছ, হাঁস মুরগী ও গবাদি পশুর একটি সমন্বিত খামার তৈরির কাজেও হাত দিয়েছেন তিনি।
© All rights reserved 2021 ® newspabna.com