বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১, ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন
রাসায়নিক অস্ত্র নিরোধে আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সই করলেও তা লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে।
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে সোমবার রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থার (ওপিসিডব্লিউ) বৈঠকে মিয়ানমারে রাসায়নিক অস্ত্র মজুদের অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি থমাস ডিন্যানো।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে ডিন্যানো বলেন, ১৯৮০-এর দশকে মিয়ানমারে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির কর্মসূচি ছিল। ওই কর্মসূচির আওতায় মিয়ানমার মাস্টার্ড গ্যাস তৈরি করত। এখনও সেই স্থাপনা ধ্বংস না করা সংক্রান্ত নিশ্চিত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে।
তিনি জানান, মিয়ানমার ২০১৫ সালে ‘কেমিক্যাল উইপনস কনভেশন’-এ সই করে। চুক্তি অনুযায়ী, এর সদস্যরা রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি, জমা রাখা ও তা ব্যবহার করতে পারে না। পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যায়, মিয়ানমার স্পষ্টতই এই চুক্তি লঙ্ঘন করছে। ডিন্যানো বলেন, মিয়ানমার সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের সময় যুক্তরাষ্ট্র তাদের রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।
১৯১তম দেশ হিসেবে ‘কেমিক্যাল উইপনস কনভেনশন’-এ সই করে মিয়ানমার। ১৯৯৭ সাল থেকে কনভেনশনটি কার্যকর হয়। ২০১৫ সালে কনভেনশনে সই করার আগে থেকেই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি ও প্রয়োগের অভিযোগ ছিল। রাখাইন রাজ্যে চলমান রোহিঙ্গা নিপীড়ন ও এ নিয়ে সৃষ্ট সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে এই অভিযোগ মিয়ানমারকে আরও বেকায়দায় ফেলবে।
বিশেষত বিষয়টি নিয়ে যখন জাতিসংঘের বিচারিক আদালত (আইসিজে) ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পৃথক বিচার কার্যক্রম চলছে। এছাড়া কাচিন, শান, চিনসহ বিভিন্ন রাজ্যে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের যত অভিযোগ : ২০১২ সালে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের এক খনিতে কর্মরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে পুলিশ ফসফরাস ব্যবহার করেছিল বলে দেশটির সংসদীয় এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ এনে প্রতিবেদন করেছিলেন দেশটির পাঁচ সাংবাদিক।
এ কারণে ২০১৪ সালে তাদের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে বাস করা কাচিন সম্প্রদায়ের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে সরকার তা অস্বীকার করেছে। ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার সংস্থা ক্রিশ্চিয়ান সলিডারিটি ওয়ার্ল্ডওয়াইড মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে কারেন সম্প্রদায়ের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ এনেছিল।
© All rights reserved 2020 ® newspabna.com