মঙ্গলবার, ০৯ মার্চ ২০২১, ১২:৩৫ অপরাহ্ন
বার্তাকক্ষ : অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে ধার করে প্রায় ৪ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন রাজেম মন্ডল (২৮)।
সেখানে গিয়ে একটি প্লাষ্টিক কারখানায় কাজ করে উপার্জন করছিলেন তিনি। চেষ্টা করেছিলেন পাওনাদারদের ধার শোধ করার।
স্বপ্ন দেখেছিলেন ছিল একমাত্র জন্ম প্রতিবন্ধী ছেলেকে ভাল চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করবেন। কিন্তু তার অকস্মাৎ মৃত্যুতে সব স্বপ্ন একেবারে বিলীন।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের খতবাড়ি পুরাতন পাড়া গ্রামের ইউসুফ মন্ডলের ছেলে রাজেম মন্ডল গত বুধবার (১৩ জানুয়াররি) সৌদি আরবের রিয়াদে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
একমাত্র সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ পিতা-মাতা। স্বামীর মৃত্যু সংবাদে অচেতন প্রায় স্ত্রী।
এদিকে রাজেমের লাশ দেশের বাড়িতে নিয়ে আসতে আড়াই লাখ টাকা লাগবে এমনটাই জানিয়েছেন সৌদিতে থাকা তাদের এক নিকট আত্মীয়।
কিন্তু পরিবারের পক্ষে এই মূহুর্তে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে রাজেমের লাশ আনা দুঃস্বপ্ন কেবল।
নিহতের চাচা হাফিজ উদ্দিন জানান, জীবিকার সন্ধানে গত চার বছর আগে রাজেম অনেক টাকা দিয়ে সৌদির রাজধানী রিয়াদে পাড়ি জমান।
সেখানে কাজ করে বেশ ভালই উপার্জন করছিল সে। গ্রামের বাড়িতে প্রতি মাসেই টাকা পাঠাতো। তবে করোনার কারণে গত কয়েক মাস সে বাড়িতে টাকা পাঠায়নি। সংসারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন।
অনেক টাকা ধার দেনা করে বিদেশ যাওয়ায় এখনও তার ঋণের টাকা পরিশোধ হয়নি। গত মঙ্গলবার রাতেও সে বাড়িতে কথা বলেছে। কথা বলার সময় বাড়িতে সে জানায় তার শরীর ভালো লাগছেনা।
তার পর শুনেছি রাতেই সে অসুস্থ হয়ে পড়লে সহকর্মীরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এমন পরিস্থিতিতে তার লাশ এখন দেশে আনতে শুনছি আড়াই লাখ টাকা লাগবে। এতো টাকা তো এই পরিবার কোনওভাবেই দিতে পারবে না।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সৈকত ইসলাম বলেন, একজন প্রবাসী মারা গেছেন, এটা অত্যন্ত দুঃখের একটি সংবাদ।
তার মরদেহ দেশে আনতে কেন টাকা প্রয়োজন হবে বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। আমি জেলা সদরে অবস্থিত প্রবাসী কল্যাণ অধিদফতরে যোগাযোগ করবো বিষয়টি নিয়ে।
এছাড়া উপজেলা পরিষদ পরিবারটির পাশে থেকে সাধ্য অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।
© All rights reserved 2021 ® newspabna.com