পাবনা প্রতিনিধি : বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হওয়ার দীর্ঘ ২২ বছর পর শিক্ষকতার বৈধতা পেলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলংকা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. আকবর হোসেন।
রোববার দুপুরে আকবর হোসেনকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম শেহেলী লায়লার মাধ্যমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান তার যোগদান পত্র গ্রহণ করার সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
চাকুরীর শেষ সময়ে এসে যোগদান করতে পেরে মো. আকবর হোসেনের দু’চোখ দিয়ে অঝোরে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু।
আর এর মধ্যে দিয়ে উক্ত বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজের নিয়োগ অবৈধ বলে বিবেচিত হয়।
জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে আটলংকা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থাকাবস্থায় প্রধান শিক্ষক আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি তাকে চাকরীচ্যুত করে।
এরপরে আকবর হোসেন বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে নিম্ন আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় তিনি বৈধতা পেয়ে তার পক্ষে রায় পান।
এই রায়ের বিপক্ষে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি পাবনা জজ কোর্টে আপিল করেন। সে আপিলেও আকবর হোসেনের পক্ষে রায় আসে।
এখানেই থেমে থাকেনি। ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে হাইকোর্টে আপিল করা হয়। সেই আপিলে আকবর হোসেনের পক্ষেই রায় দেয় মহামান্য হাইকোর্ট।
এই রায়ের বিপক্ষে প্রতিপক্ষ রিভিউ পিটিশন দায়ের করেন এবং সেখানেও আকবর হোসেন তার পক্ষে রায় পান।
সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখলে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
ইতিমধ্যে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়। এরপরেও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা শিক্ষক আকবর হোসেন আদালতের রায় উপেক্ষা করে যোগদান না করিয়ে নানা রকম টালবাহানা করতে থাকেন।
আকবর হোসেন বিদ্যালয়ে যোগদান করতে গেলে উক্ত কমিটির তৎকালীন সভাপতি তাকে যোগদান করতে বাধা প্রদান করেন।
অবশেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অনুরোধক্রমে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় পত্র মারফত চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে যোগদান করানোসহ আদালতের রায় মোতাবেক চাকুরীবিধি অনুযায়ী বকেয়া বেতন ও অন্যান্য যাবতীয় পাওনা পরিশোধের অনুরোধ করা হয়।
জীবনের শেষ সময়ে এসে শিক্ষকতা পেশার বৈধতা পেয়ে শিক্ষক আকবর হোসেনসহ তার পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
0
1